সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ সুবহানাহুতায়ালা জন্য
প্রিয় সুহৃদ
শুভেচ্ছা, ভালোবাসা-
বিশ বছর আগে এমন এপ্রিলে এক নতুন লড়াইয়ে নেমেছিলাম অচেনা মাঠে। প্রান্তিক মানুষের অধিকার, বঞ্চনা, সমস্যা, সাফল্য-সম্ভাবনার খবর জনপরিসরে তুলে ধরতে সাপ্তাহিক চলমান নোয়াখালী প্রকাশনার মধ্যদিয়ে শুরু করেছিলাম লড়াই। সাপ্তাহিক থেকে দৈনিকে এবং অনলাইনে প্রকাশনায় দীর্ঘ পথচলায় সহকর্মী সাংবাদিক, লেখক, বিজ্ঞাপনদাতা, শুভানুধ্যায়ী থেকে শুরু করে শত-সহ¯্র মানুষের সহযোগীতা ছিলো। যা এখনো অবিরত।
এজন্য মহান রবের শুকরিয়া আদায় করছি। কৃতজ্ঞতা সেইসব মানুষদের প্রতি যাদের অকুন্ঠ সমর্থন বৈরী পরিবেশ উতরে টিকে থাকতে সহায়তা করেছিলো।
আট বছরের প্রবাস জীবনে সাংবাদিকতা পিছু ছাড়েনি। লেখালেখি থেকে দূরে থাকলেও দাদনে মহাজন কিংবা মাঝির কাছে আগাম শ্রম বিক্রি করা তরুণের করুন চাহনি, সুতার টানে ছিঁড়ে যাওয়া জাল মেরামত করলেও জীবনের জাল বুনতে না পারা জেলে, অসহায় ভূমিহীন কিংবা হাসপাতালের করিডোরে ক্রসফায়াাে গুলিবিদ্ধ রাজনৈতিক নেতার নিথর দেহের কথা মনে পড়ে।
নস্ট রাজীতির শিকার হয়ে চোখের সামনে বসত পুড়ে ছাই হওয়া সংখ্যালঘুর আর্তনাদ কিংবা ‘পায়ে গুলি খেলে মানুষ মরেনি?’ কোন কর্মকর্তার এমন স্বগোক্তি, গুলি-সংঘর্ষ-আগুনে ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের আহজারী যেনো কানে ফেরে সময়ের পরিক্রমায়।
“ভাইয়া, কি জানতে চান তাড়াতাড়ি বলেন। আমাকে ডেলিভারিগুলো তাড়াতাড়ি পৌঁছাতে হবে- ম্যানহাটনের রাস্তায় ডেলিভারি বাইকারের এমন কথায় সম্বিত ফিরে। তীব্র শীতেও ছুটে চলা জীবন নিয়ে লিখতে ইচ্ছে করে। চোখের সামনে শিক্ষা, চাকরি, ব্যাবসায় বাংলাদেশীদের দাপুটে সাফল্য আশান্বিত করে। আয়ের সাথে সমন্বয় রেখে জীবন পরিচালনার টানাপোড়েন মনে করিয়ে দেয় দেশের মানুষের টিকে থাকার লড়াইয়ের কথা।
“কষ্টের টাকা যখন পাচার হয়ে ফেরত আসতে শুনি তখন কষ্ট আরো বেড়ে যায়” প্রচন্ড শীতে খাবারের জন্য ফুড ব্যাংকের সামনে দাঁড়ানো কোন প্রবাসীর কন্ঠে শোনা এমন কথা গায়ে চিমটি কেটে বোধ যাচাই করে।
বাড়ছে কমিউনিটির পরিসর, পুরো যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে বিশেষত নিউইয়র্কে মূলধারার রাজনীতিতে কদর বাড়ছে প্রবাসী বাংলাদেশীদের। কেউ কেউ নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হিসাবে ভূমিকা রাখছেন সাফল্যের সাথে। স্রোতের মতো আসছে তরুন, যুবকরা। কেউ স্টুডেন্ট ভিসায় কেউ সীমান্ত পাড়ি দিয়ে। বাড়ছে এখানকার বাংলা গণমাধ্যমের পরিসরও।
নানান জাতি, ভাষাভাষীর এই দেশে জীবনযাত্রার বৈচিত্রপূর্ণ সমাহার আকৃষ্ট করে। নতুন স্বপ্নে বুকে বাঁধে বাংলাদেশী কমিউনিটির নিজস্ব খবরাখবর, তথ্য, সুযোগ আর সম্ভাবনার কথা তুলে ধরতে। সেই নিরিখে একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালের আগ্রহ তৈরী হয়। সেইসাথে যুক্ত হয় ভিডিও চিত্রে সংবাদ প্রকাশের আকাঙ্খা।
লড়াইয়ের পুরনো কৌশল রপ্ত থাকলেও লড়াইয়ের নতুন মাঠ আর প্রতিকূল পরিবেশে সেই স্বপ্ন ভর করে ‘‘দেশি খবর’’ নামের ডিঙিতে। বাংলাদেশী জনসমামজের তীরে সেই ডিঙি ভেড়াতে আমাদের সহযাত্রী হয়েছে কিছু মানুষ। আল্লাহ সুবহানাহুতায়ালার অশেষ কৃপায় তিনি এই মানুষদেও যুক্ততা আমাদেরকে আশান্বিত করেছে।
আমরা যখন এমন একটি অনলাইন প্ল্রাটফর্মের জন্য নাম সার্চ করতে ছিলাম গুগলে। পছন্দের নামগুলো পাওয়া যাচ্ছিলোনা। প্রিয় মানুষগুলোও আমাদেও জন্য চেষ্টা করছেন। হঠাৎ করেই মুঠোফোনে তথ্য-প্রযুক্তিবিদ মুশফিকুর রহমান মিলন ভাই’র উচ্ছ্বাসিত কন্ঠ- মাসুদ ভাই ‘দেশি খবর’ নামটি পাওয়া গেছে। আপনি দ্রুত ডোমেইন নেন। নামকরণে তিনি স্মরণীয় হয়ে থাকলেন আমাদের কাছে।
এমনই একজন প্রথম আলো উত্তর আমেরিকার সম্পাদক ইব্রাহিম চৌধুরী খোকন ভাই। গত দুইবছর থেকে তিনি প্রথম আলো পরিবারের একজন হিসাবে আমাকে সাংবাদিকতায় ফিরতে উদ্বুদ্ধ করেছেন, প্রেরণা যুগিয়েছেন কাছ থেকে।
নিউইয়র্কের মতো জায়গায় প্রতিদিনের কাজ শেষে সাংবাদিকতার মতো একটি অলাভজনক পেশায় নিজেকে পুনরায় ফিরিয়ে নিতে সহায়হক হয়েছে আমার কাজের ধরণ পরিবর্তনের কারণে। যেটি সম্ভব হয়েছে কমিউনিটির প্রিয়মুখ ব্যবসায়ী, রাজনৈতিক- প্রিয় অনুজ নুরুল আমিন বাবুর কারণে। গত ৮ বছর ধরেই তিনি আগলে রেখেছেন নানা অনুযোগ, আবদার।
শ্লোগান নিয়ে বারবার বিরক্ত করেছি সাংবাদিক, তথ্যচিত্র নির্মাতা প্রিয় শামীম আল আমিন ভাইকে। খুদেবার্তায় যখন যা আবদার করেছে সায় দিয়েছেন সানন্দ চিত্তে। একইভাবে দেশ থেকে সাড়া দিয়েছে অবিরত কবি, সাংবাদিক প্রিয় সহকর্মী জামাল হোসেন বিষাদ ভাই।
নিজের ব্যাস্ততাকে তুচ্ছ করে দেশি খবরের জন্য লগো করে দিয়েছেন চিত্রশিল্পী মামুন হোসাইন ভাই। আর আমাদের কাঙ্খিত ওয়েব সাইটটি নিজের সেরাটা দিয়ে তৈরীতে সচেষ্ট ছিলেন মিরাজ বাপ্পি ভাই। নিজের ব্যাস্ততার জন্য কিছুটা দীর্ঘায়িত হলেও তিনি চেয়েছেন একটি যেনো গতানুগতিক না হয়। গত প্রায় ৪ বছর ধরে আমাদের নানা প্রচেষ্টায় তিনি যুক্ত থেকেছেন আগ্রহ নিয়ে। শতব্যাস্ততায়ও বিরক্ত হননি। আর মামুন ভাই আর মিরাজ ভাই থেকে কাজটুকুন আদায় করে নিতে আঠার মতো লেগে ছিলেন আমার দীর্ঘ দেড়যুগের জ্বালাতনের প্রতীক প্রিয় জাহিদুর রহমান।
আমাদের এই পথচলায় সামিল হয়েছেন তরুণ স্বেচ্ছাব্রতি ফয়সাল। খুটিনাটি বিষয়গুলোকে মেধা আর মননের যুথবদ্ধ প্রচেষ্ঠায় নিজের সেরাটা দিয়েছেন দেশি খবরের জন্য। তিনি সাথে নিয়েছেন আরেক তরুণ গ্রাফিক্স ডিজাইনার হেলালকে। এবারই প্রথম পরিচয় হওয়া সাইবার স্বেচ্ছাসেবী সাইদুর রহমান রায়হান সায় দিচ্ছেন প্রতিনিয়ত, যেকোন প্রয়োজনে।
এই হচ্ছে আমাদেও স্বপ্নের প্রাথমিক পথচলা। প্রবাসে বাংলাদেশীদের কথা এবং দেশের মানুষের কথা, তথ্য, বিশ্লেষণ, সুযোগ-সম্ভাবনার কথা থাকবে দেশি খবরে। বছরে একটি খবরও যদি কারো সহায়ক হয় আমাদের চেষ্টা থাকবে এমনটি। তাই আমরা বলছি ‘দেশির খবর পড়–ন দেশি খবরে’। আপনিও আমাদেও সাথে থাকুন আগামির পথচলায়।
আল্লাহ আমাদের সহায় হোন।
সম্পাদক : মাহমুদুল হাসান (রুদ্র মাসুদ)
ঠিকানাঃ ৮৬-৩২ ১০২ এভিনিউ, ওজন পার্ক, দ্বিতীয় তলা, নিউ ইয়র্ক, এনওয়াই-১১৪১৬, ইউএসএ
© 2024 Deshi Khobor All Rights Reserved. Developed By Root Soft Bangladesh.