× হোম দেশির খবর অনুষ্ঠান-কর্মসূচী-উদযাপন দেশের খবর দশদিক দুনিয়া দশকথা ভিডিও সব ছবি ভিডিও আর্কাইভ

“দেশের স্বার্থেই দেশ টাকা দিতে বাধ্য”

রুদ্র মাসুদ-

২৯ জুলাই ২০২৪ ০২:৪১ এএম । আপডেট: ২৮ আগস্ট ২০২৪ ০৯:০৫ এএম

প্রতিমাসে দুইবার করে টাকা পাঠাই। দেশের এমন পরিস্থিতি গ্রহণযোগ্য নয়। কিন্তু, দেশে স্বজনরা আছে, টাকাতো পাঠাতেই হয়। তাই এখন টাকা পাঠাচ্ছি। ডাচ্ বাংলা ব্যাংকের একাউন্টে এ টাকা জমা হবে। দুইদিন দেরী হলেও টাকা পাওয়া যাবে। প্রবাসীদের টাকায় রিজার্ভ সমৃদ্ধ হয়। তাই দেশের স্বার্থেই দেশ টাকা (প্রেরিত অর্থ) দিতে বাধ্য।

শনিবার বিকালে নিউইয়র্ক সিটির ওজনপার্কের এ্যাংকর ট্রাভেলসে টাকা পাঠাতে আসা মাহফুজুর রহমান সুমন এভাবেই রেমিটেন্স প্রেরণ নিয়ে নিজের মতামত ব্যাক্ত করেন। টাকা পাঠাতে আসা গ্রাহকদের অনেকেই তাঁর মতো নিয়মিত পারিবারিক ব্যায় নির্বাহের জন্য টাকা পাঠাতে দেখা যায়।

বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতি এবং ইন্টারনেট সেবা বন্ধ থাকায় বিগত সাপ্তাহে ১৭ থেকে ২১ জুলাই রেমিটেন্স প্রেরণ দ্রুত কমতে থাকে। কোন কোন এজেন্টের কাছে লেনদেন তলানীতে ঠেকে। সেই পরিস্থিতির ক্রমেই উন্নতি ঘটছে বলে জানিয়েছেন এজেন্টরা। তাছাড়া মাসের শেষ দিকে হওয়ায় এই সময়ে দেশে টাকা প্রেরণের পরিমান বাড়ে।

এদিকে দেশের চলমান আন্দোলনের সমর্থনকারী অনেকে সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রেমিটেন্স প্রেরণ বন্ধ রাখতে যেমন প্রচারণা চালিয়েছেন। আবার তাদের কেউ কেউ হুন্ডিতে টাকা প্রেরণের জন্য ইনবক্সে যোগাযোগ করতে বলায় সমালোচনা দেখা গেছে সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। কেউ কেউ বলছেন- হুন্ডিতে দেশে টাকা পাঠাতে উদ্বুদ্ধ করা মূলত দেশ থেকে যারা টাকা পাচার করে তাদের সহযোগীতা করা। হুন্ডির এই সুযোগে দেশের অবৈধ অর্থের মালিকরা দ্রুত পাচারের সুযোগ নিবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সাধারণত শুক্রবার দুপুর থেকে শনিবার এবং রোববার মানি ট্রান্সফার কোম্পানী ও তাঁদের এজেন্টগুলোর অফিসে গ্রাহকদের ভীড় থাকে দেশে টাকা প্রেরণ করতে। কোটা আন্দোলনকে ঘিরে ছাত্র হত্যার জের ধরে দেশজুড়ে হামলা-সহিংসতা, গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় স্থাপনায় আগুন, আন্দোলন নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে ব্যাপক প্রাণহানী, গুজব প্রচার, ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া, আন্দোলন সমর্থকারীদের রেমিটেন্স না পাঠানোর প্রচারণার কারণে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় রেমিটেন্স প্রেরণ তলানীতে নেমে আসে।

ইন্টারনেট সেবার বন্ধ থাকায় মানি ট্রান্সফার এজেন্টরা বিকাশ একাউন্ট ভেরিফাই করতে পারেনি। আবার গ্রাহকদের মাঝে প্রেরিত টাকা প্রাপ্তি নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। একইসাথে দুই দিনের অতিরিক্ত সরকারি ছুটি এবং কারফিউর কারণে টাকা পাঠানো বন্ধ রাখেন অনেক প্রবাসী। কেউ কেউ হুন্ডিতে টাকা প্রেরণের জন্য উৎসাহিত করতে দেখা যায়। তবে; এই সাপ্তাহে পরিস্থিতি বিবেচনায় টাকা প্রেরণের হার বেড়েছে বলে জানিয়েছেন মানি ট্রান্সফার এজেন্টরা।

স্বাভাবিক শনিবারের তুলনায় গত ২০ জুলাই শনিবার ১৫/১৬ শতাংশ গ্রাহক টাকা পাঠাতে এসেছিলেন নিউইয়র্ক সিটির জ্যাকসন হাইটস্ এর স্ট্যান্ডার্ড এক্সপ্রেসে। শনিবার (২৭ জুলাই শনিবার) সেই হার ৮০ শতাংশেরও বেশী ছিলো বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার আজিজুল হক।

ওজনপার্কের সোনালী এক্সচেঞ্জের ম্যানেজার কবির হোসেন বলেন,গতসাপ্তাহের তুলনায় লেনদেন বেড়েছে। স্বাভাবিক শনিবারে যে লেনদেন হয় আজকেও (২৭ জুলাই শনিবার) লেনদেনের পরিমান প্রায় কাছাকাছি। গ্রাহকরা একাউন্টে টাকা পাঠাচ্ছে, একউন্টেই টাকা জমা হচ্ছে। ইন্টারনেট সেবা পুরোপুরি চালু না হওয়ায় বিকাশ একাউন্ট ভেরিফাই করতে অসুবিধা হচ্ছে।

ওজন পার্কের এ্যাংকর ট্রাভেলস্ এর কর্ণধার মাইন উদ্দিন পিন্টু জানান, টাকা পাঠানোর পুরো প্রকৃয়াটি ইন্টারনেট সেবার সাথে জড়িত, তাছাড়া ব্যাংক বন্ধ ছিলো সেজন্য গ্রাহকরা গত সাপ্তাহে কম টাকা পাঠিয়েছে। ব্যাংক খোলা থাকলে মানুষ টাকা তুলতে পারে। এই সাপ্তাহে অর্ধেকেরও বেশী নিয়মিত গ্রাহক টাকা পাঠাতে এসেছেন তাঁর প্রতিষ্ঠানে। ক্রমেই রেমিটেন্স প্রেরণের গতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে বলে তিনি মন্তব্য করেন। 

যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশী মালিকানাধীন মানিট্রান্সফার কোম্পানী সানম্যান গ্লোবাল এক্সপ্রেস’র প্রধান নির্বাহী মাসুদ রানা তপনের মতে সহিংসতার প্রথম সাপ্তাহে (১৭ থেকে ২১ জুলাই) স্বাভাবিক সাপ্তাহের তুলনায় লেনদেন ২০শতাংশে নেমে আসে। দেশের চলমান সহিংস পরিস্থিতি, ইন্টারনেট সেবার পতন ও ব্যাংক বন্ধ হওয়ায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। গত সাপ্তাহে এটি কিছুটা বেড়ে প্রায় ৪০ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। 

গ্রাহকরা একাউন্টে টাকা পাঠিয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে দেশে একাউন্টে টাকা জমা হয়ে যাবে। তবে; লেনদেন স্বাভাবিক পর্যায়ে পৌঁছতে সময় লাগতে পারে।

Deshi Khobor

সম্পাদক : মাহমুদুল হাসান (রুদ্র মাসুদ)

ঠিকানাঃ ৮৬-৩২ ১০২ এভিনিউ, ওজন পার্ক, দ্বিতীয় তলা, নিউ ইয়র্ক, এনওয়াই-১১৪১৬, ইউএসএ

© 2024 Deshi Khobor All Rights Reserved. Developed By Root Soft Bangladesh.