বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস যা ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম ডে নামে পালিত হয়েছে আসছে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে। প্রতি বছর তিন মে জাতিসংঘের শিক্ষা, বৈজ্ঞানিক ও সাংস্কৃতিক সংস্থা-ইউনেস্কো গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, সাংবাদিকদের নিরাপত্তা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতার দাবিতে দিবসটি উদযাপন করে আসছে। "অধিকারের ভবিষ্যৎ গঠন করা: অন্য সকল মানবাধিকারের চালক হিসাবে মত প্রকাশের স্বাধীনতা” (“Shaping
a Future of Rights: Freedom of expression as a driver for all other human
rights”) এই শ্লোগানকে সামনে রেখে এবছর সংস্থাটি ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম ডে’র তিন দশক পূর্তি উদযাপন করবে।
দুনিয়াজোড়া তথ্যের অবাধ প্রবাহ বাধাগ্রস্থ করা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে খর্ব করতে সাংবাদিকদের প্রতি নিপীড়ন চলে আসছে বছরের পর বছর। এরওপর যুক্ত হয়েছে নিবর্তনমুলক আইন। একইসাথে সাংবাদিক নির্যাতন, হামলা ও কারারুদ্ধ করার ঘটনা ঘটছে অহরহ। এবছর ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম ডে’র প্রাক্কালে দেশে দেশে সাংবাদিকদের নির্যাতনের ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। একইসাথে তিনি কথা বলেছেন গণমাধ্যম শিল্প কিছু ব্যাক্তির হাতে কুক্ষিগত হওয়া এবং গণমাধ্যমে আর্থিক বিষয়াদি এবং গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রনের আইনের বিষয়েও।
২৮ এপ্রিল এক ভিডিও বার্তায় জাতিসংঘ মহাসচিব তাঁর উদ্বেগের কথা তুলে ধরে। দেশি খবরের পাঠকদের যার সংক্ষেপিত তুলে ধরা হলো-
"তিন দশক ধরে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ‘ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম ডে’ তে সাংবাদিক ও গণমাধ্যম কর্মীদের কাজকে উদযাপন করছে। এই দিনটি একটি মৌলিক সত্য তুলে ধরে: আমাদের সমস্ত স্বাধীনতা সংবাদপত্রের স্বাধীনতার উপর নির্ভর করে।
সংবাদপত্রের স্বাধীনতা গণতন্ত্র ও ন্যায় বিচারের ভিত্তি। এটি আমাদের সকলকে এমন তথ্য দেয় যা আমাদের মতামত গঠন করতে এবং ক্ষমতার কাছে সত্য কথা বলার জন্য প্রয়োজন। এবং এই বছরের থিম যেমন আমাদের মনে করিয়ে দেয়, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা মানবাধিকারের প্রাণবন্ত প্রতিনিধিত্ব করে।
কিন্তু বিশ্বের প্রতিটি কোণে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা আক্রমণের মুখে রয়েছে। সত্য মিথ্যা তথ্য এবং ঘৃণামূলক বক্তব্য দ্বারা হুমকির সম্মুখীন হয়, যা সত্য এবং কল্পকাহিনী, বিজ্ঞান এবং ষড়যন্ত্রের মধ্যে রেখাগুলিকে অস্পষ্ট করতে চায়।
কয়েকজনের হাতে মিডিয়া ইন্ডাস্ট্রির কেন্দ্রিভূতকরণ বেড়েছে, অনেক স্বাধীন সংবাদ সংস্থার আর্থিক পতন, এবং জাতীয় আইন ও প্রবিধানের বৃদ্ধি যা সাংবাদিকদের দমিয়ে রাখে সেন্সরশিপকে আরও প্রসারিত করছে এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে হুমকির সম্মুখীন করছে।
এদিকে, সাংবাদিক ও গণমাধ্যমকর্মীরা তাদের গুরুত্বপূর্ণ কাজ করার সময় সরাসরি অন এবং অফলাইনে টার্গেট করা হয়। তাদের প্রতিনিযয়ত, হয়রানি, ভয়ভীতি, আটক ও কারারুদ্ধ হয়।
২০২২ সালে কমপক্ষে ৬৭ জন মিডিয়া কর্মী নিহত হয়েছেন - যা আগের বছরের তুলনায় অবিশ্বাস্য ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রায় তিন চতুর্থাংশ নারী সাংবাদিক অনলাইনে সহিংসতার শিকার হয়েছে এবং চারজনের একজনকে শারীরিকভাবে হুমকি দেওয়া হয়েছে।
দশ বছর আগে, গণমাধ্যম কর্মীদের সুরক্ষা এবং তাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধের দায়মুক্তির অবসানের জন্য জাতিসংঘ সাংবাদিকদের সুরক্ষার জন্য একটি কর্মপরিকল্পনা প্রতিষ্ঠা করে।
এবার এবং প্রতিটি বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবসে বিশ্বকে এক কণ্ঠে কথা বলতে হবে।
হুমকি ও হামলা বন্ধ করুন। সাংবাদিকদের তাদের কাজ করার জন্য আটক ও কারারুদ্ধ করা বন্ধ করুন।
মিথ্যা ও অপপ্রচার বন্ধ করুন। সত্য ও সত্যবাদীদের টার্গেট করা বন্ধ করুন।
সাংবাদিকরা যখন সত্যের পক্ষে দাঁড়ায়, বিশ্ব তাদের পাশে দাঁড়ায়।"
সম্পাদক : মাহমুদুল হাসান (রুদ্র মাসুদ)
ঠিকানাঃ ৮৬-৩২ ১০২ এভিনিউ, ওজন পার্ক, দ্বিতীয় তলা, নিউ ইয়র্ক, এনওয়াই-১১৪১৬, ইউএসএ
© 2024 Deshi Khobor All Rights Reserved. Developed By Root Soft Bangladesh.