দানবীয় এক শাসনের কবল থেকে ৫ আগস্ট দেশমুক্ত হয়েছিলো। এই পরিবর্তন স্বাধীনতা হিসাবে প্রচার পাচ্ছে অন্তবর্তীকালীন সরকারের শীর্ষমহল থেকে তৃণমূল পর্যন্ত। আওয়ামী লীগ ও তাঁদের জোটভুক্ত রাজনৈতিক দল ছাড়া বাকী প্রায় সবগুলো রাজনৈতিক দলও তাই বলছে।
৫ আগস্টের পর সরকারি কাঠামোর বাইরে সরকারি প্রভাববলয়ে দেশের রাজনীতিতে চালকের আসনে কারা ছিলো এবং প্রশাসন কারা নিয়ন্ত্রন করেছে সেটি কমবেশী সবার জানা। জেলা প্রশাসক নিয়োগ নিয়ে বাংলাদেশে গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিষ্ফোরক তথ্য কি প্রমাণ করে?
ডিসি নিয়োগ নিয়ে যে দুইজনের কথোপকথনের রেকর্ড গণমাধ্যমে ফাঁস হয়েছে তাঁদের একজন হচ্ছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া সিনিয়র সচিব ড. মো. মোখলেস উর রহমান এবং বিতর্কিত দুজন যুগ্ম সচিব ড. জিয়াউদ্দিন আহমেদ ও আলী আযম।
অবসরে থাকা হার্ভাড গ্র্যাজুয়েট ড. মো. মোখলেস উর রহমানকে সরকার দুই বছরের জন্য সিনিয়র সচিব হিসাবে চুক্তিতে নিয়োগ দিয়েছিলেন জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়ে। ২৮ আগস্ট যোগদানের পর ১৬ বছরের অপশাসনের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতা যে বিপ্লব করেছে সে মূল্যবোধকে ধারণ করে জনপ্রশাসনের সকলকে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
গত ১৩ আগস্ট ২০তম ব্যাচের কর্মকর্তা ড. জিয়াউদ্দিনকে সিনিয়র সহকারী সচিব থেকে উপসচিব পদে পদোন্নতি দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসনে ন্যস্ত করে সরকার। ওইদিনই তিনি যোগদান করেন। এরপর ১৮ আগস্ট আরেক দফা পদোন্নতি দিয়ে তাকে যুগ্ম সচিব করা হলে ওইদিনই তিনি যোগদান করেন।
এখান যাদের পদোন্নতি দেয়া হচ্ছে তাঁরা আওয়ামী লীগ সমর্থিত নয়, এটি বাস্তবতা। আওয়ামী লীগের শাসনামলে যাদের পদোন্নতি থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে, ওএসডি করা হয়েছে। তাঁরই এখন অগ্রাধিকার পাচ্ছেন। কারা ড. মোখলেসকে পছন্দ করেছেন এবং একসাপ্তাহে দুটি পদোন্নতির জন্য ড. জিয়াউদ্দিনের জন্য সুপারিশ করেছেন তাঁদের শনাক্ত করা জরুরী। তাঁদের রাজনৈতিক পরিচয় এবং আদর্শ উন্মোচন করা হোক।
তাহলে কি এখনো প্রশাসনের সর্বোচ্ছস্তর আওয়ামী লীগ নিয়ন্ত্রণ করছে? নাকি যারা ৫ আগস্টের যারা বাংলাদেশের রাজনীতির নিয়ন্ত্রকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন তাঁরা নিয়ন্ত্রণ করছেন। সেটি পরিস্কার হওয়া জরুরী। সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে নিয়োগ, পদোন্নতির নিয়ন্ত্রকদের রাজনৈতিক পরিচয় কি?
তাঁরা কি সরকারের দূর্ণাম রটাতে পরিকল্পিতভাবে এসব করছেন? নাকি জনগণের সহানুভূতি ও সরকারের অনুপ্রবেশ করে দূর্ণীতির মহোৎসবে মেতে উঠেছেন?
সম্পাদক : মাহমুদুল হাসান (রুদ্র মাসুদ)
ঠিকানাঃ ৮৬-৩২ ১০২ এভিনিউ, ওজন পার্ক, দ্বিতীয় তলা, নিউ ইয়র্ক, এনওয়াই-১১৪১৬, ইউএসএ
© 2024 Deshi Khobor All Rights Reserved. Developed By Root Soft Bangladesh.